Friday 26 December 2014

নবজাতকের মুখে মধুঃ


নবজাতকের মুখে মধুঃ





আমাদের দেশে এটি প্রচলিত প্রথা যে জন্মের পর পরই নবজাতকের জীভে মধু ছোয়ানো হয়। এটি একটি প্রচলিত বিশ্বাস যে এতে নাকি বাচ্চাটি মিষ্টভাষী হবে। মোটামোটি আমরা সবাই জানি যে এটা কুসংস্কার বৈ অন্য কিছু না। তারপরেও অভ্যাসের বশে অথবা মুরব্বীদের মন রক্ষার্থে আমরা আমাদের সন্তানদের ক্ষেত্রেও এই প্রথা অনুসরণ করি। কিন্তু আপনি জানেন কি যে এর মাধ্যমে আপনি আপনার সন্তানের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারেন? পাশ্চাত্য দেশ গুলোতে এক বছর কম বয়সী বাচ্চাদের মধু খাওয়াতে ডাক্তাররা কড়াকড়ি ভাবে নিষেধ করেন। কাচা মধু তে বটুলিসম রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার বীজ (স্পোর) থাকতে পারে। পূর্ণ বয়স্ক মানুষ যখন মধু সেবন করেন, তার পাকস্থলির এসিড এই ব্যাকটেরিয়ার বীজ (স্পোর) কে ধ্বংস করে ফেলে। কিন্তু এক বছর চেয়ে কম বয়সের বাচ্চার পাকস্থলিতে পূর্ণবয়স্কদের মত অতটা এসিড থাকেনা (এই পরিমাণ এসিড তৈরী করতে তার বয়স এক বছর হতে হয়), তাই সে সহজেই বটুলিসম রোগে আক্রান্ত হতে পারে। বটুলিসম রোগের ব্যাকটেরিয়া প্রথমে বাচ্চার অন্ত্রে বংশ বিস্তার করে। এরপর ধীরে ধীরে এটি একটি বিষ (টক্সিন) নিঃসরন করতে থাকে। এই বিষ রক্তে মিশে বাচ্চাকে প্যারালাইসড করে ফেলে। চূড়ান্ত পর্যায়ে বাচ্চার ফুসফুস প্যারালাইসড হয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে বাচ্চাটির মৃত্যু ঘটে। মধু দ্বারা বাচ্চাদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রমাণ বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময়ে নানা গবেষনায় প্রমাণিত হয়েছে (তথ্যসূত্র দেখুন নিচের লিঙ্কগুলোতে)।
মুরব্বীদের মন রক্ষার্থে মধু যদি খাওয়াতেই হয়, চাক ভাঙ্গা খাটি মধু না খাইয়ে বাজারে সহজলভ্য বোতল জাত মধু গুলো খাওয়ান। বোতলজাত মধু “পাস্তুরাইজেশন” পদ্ধতিতে জীবানুমুক্ত করা হয় যাতে কোন জীবানু থাকেনা। কেনার আগে অবশ্যই বোতলে “পাস্তুরিত” কথাটা লেখা আছে কিনা দেখে কিনবেন।


তথ্যসূত্রঃ
http://www.ncbi.nlm.nih.gov/pubmed/22778374
http://www.ncbi.nlm.nih.gov/pubmed/20724121
http://www.ncbi.nlm.nih.gov/pubmed/22962382
http://www.ncbi.nlm.nih.gov/pubmed/23914481
http://www.ncbi.nlm.nih.gov/pubmed/22159905
http://en.wikipedia.org/wiki/Botulism#Infants
http://www.babycenter.com/404_is-it-safe-to-eat-honey-during-pregnancy_10305372.bc

No comments:

Post a Comment